Generated on: Fri Dec 19 2014

Home

::

Show All

::

Show Current

::

Scroll TOC Up| Down

Send a Comment

দুর্মর
পূর্বাভাস
সুকান্ত ভট্টাচার্য
হিমালয় থেকে সুন্দরবন, হঠাৎ বাংলা দেশ
কেঁপে কেঁপে উঠে পদ্মার উচ্ছ্বাসে,
সে কোলাহলের রুদ্ধস্বরের আমি পাই উদ্দেশ
জলে ও মাটিতে ভাঙ্গনের বেগ আসে।

হঠাৎ নিরীহ মাটিতে কখন,
জন্ম নিয়েছে সচেতনতার ধান,
গত আকালের মৃত্যুকে মুছে
আবার এসেছে বাংলা দেশের প্রাণ

“হয় ধান নয় প্রাণ” এ শব্দে
সারা দেশ দিশাহারা,
একবার মরে ভুলে গেছে আজ
মৃত্যুর ভয় তারা।
সাবাস, বাংলা দেশ, এ পৃথিবী
অবাক তাকিয়ে রয়:
জ্বলে পুড়ে-মার ছারখার
তবু মাথা নোয়াবার নয়।

এবার লোকের ঘরে ঘরে যাবে
সোনালী নয়কো, রক্তে রঙিন ধান,
দেখবে সকলে সেখানে জ্বলছে
দাউ দাউ করে বাংলা দেশের প্রাণ॥
    
“নব জ্যামিতি”র ছড়া
অপ্রচলিত
সুকান্ত ভট্টাচার্য

Food Problem [একটি প্রাথমিক সম্পাদ্যের ছায়া অবলম্বনে]

সিদ্ধান্ত:
        আজকে দেশে রব উঠেছে, দেশেতে নেই খাদ্য;
        ‘আছে’, সেটা প্রমাণ করাই অধুনা ‘সম্পাদ্য’।

কল্পনা:
        মনে করো, আসছে জাপান অতি অবিলম্বে,
        সাধারণকে রুখতে হবে অতি দৃঢ় ‘লম্বে’।
        “খাদ্য নেই” এর প্রথম পাওয়া খুব ‘সরল রেখা’তে,
        দেশরক্ষার ‘লম্ব’ তোলাই আজকে হবে শেখাতে।

অঙ্কন:
        আত্মনিয়ন্ত্রণের দাবীর ক্ষুদ্র বিন্দু থেকে,
        প্রতিরোধের বিন্দুতে নাও ঐক্য-রেখা এঁকে!
        ‘হিন্দু-মুসলমানে’র কেন্দ্রে, দুদিকের দুই ‘চাপে’
        যুক্ত করো উভয়কে এক প্রতিরোধের ধাপে।
        প্রতিরোধের বিন্দুতে দুই জাতি যদি মেলে,
        সাথে সাথেই খাদ্য পাওয়ার হদিশ তুমি পেলে।

প্রমাণ:
        খাদ্য এবং প্রতিরোধ উভয়েরই চাই,
        হিন্দু এবং মুসলমান মিলন হবে তাই।
        উভয়ের চাই স্বাধীনতা, উভয় দাবীই সমান,
        দিকে দিকে ‘খাদ্যলাভ’ একতারই প্রমাণ।
        প্রতিরোধের সঠিক পথে অগ্রসর যারা,
        ঐক্যবদ্ধ পরস্পর খাদ্য পায় তারা॥
    
উদ্যোগ
পূর্বাভাস
সুকান্ত ভট্টাচার্য
বন্ধু, তোমার ছাড়ো উদ্বেগ, সুতীক্ষ্ণ করো চিত্ত,
বাংলার মাটি দুর্জয় ঘাঁটি বুঝে নিক দুর্বৃত্ত।
মূঢ় শত্রুকে হানো স্রোত রুখে, তন্দ্রাকে করো ছিন্ন,
একাগ্র দেশে শত্রুরা এসে হয়ে যাক নিশ্চিহ্ন।
ঘরে তোল ধান, বিপ্লবী প্রাণ প্রস্তুত রাখো কাস্তে,
গাও সারিগান, হাতিয়ারে শান দাও আজ উদয়াস্তে।
আজ দৃঢ় দাঁতে পুজিত হাতে প্রতিরোধ করো শক্ত,
প্রতি ঘাসে ঘাসে বিদ্যুৎ আসে জাগে সাড়া অব্যক্ত।
আজকে মজুর হাতুড়ির সুর ক্রমশই করে দৃপ্ত,
আসে সংহতি; শত্রুর প্রতি ঘৃণা হয় নিক্ষিপ্ত।
ভীরু অন্যায় প্রাণ-বন্যায় জেনো আজ উচ্ছেদ্য,
বিপন্ন দেশে তাই নিঃশেষে ঢালো প্রাণ দুর্ভেদ্য!
সব প্রস্তুত যুদ্ধের দূত হানা দেয় পুব-দরজায়,
ফেণী ও আসামে, চট্টগ্রামে ক্ষীপ্ত জনতা গর্জায়।
বন্ধু, তোমার ছাড়ো উদ্বেগ, সুতীক্ষ্ণ করো চিত্ত,
বাংলার মাটি দুর্জয় ঘাঁটি বুঝে নিক দুর্বৃত্ত॥